বিশ্বজুড়ে শিশুদের টিকাদানের হার থমকে গেছে। মহামারির আগের তুলনায় এখন অনেক বেশি শিশু টিকাহীন বা আংশিক টিকা প্রাপ্ত অবস্থায় রয়েছে। জাতিসংঘ সোমবার এই তথ্য জানিয়েছে। এ অবস্থায় হামসহ প্রতিরোধযোগ্য রোগের প্রাদুর্ভাবের ঝুঁকি বাড়ছে।

২০২৩ সালে বিশ্বজুড়ে ৮৪ শতাংশ শিশু ডিপথেরিয়া, টিটেনাস ও পার্টুসিস (ডিটিপি) টিকার তিন ডোজ পেয়েছে। এই হার ২০২২ সালের মতোই অপরিবর্তিত রয়ে গেছে। ২০১৯ সালে মহামারির আগে এই হার ছিল ৮৬ শতাংশ।

“এটা প্রমাণ করে যে অনেক দেশ এখনও অনেক শিশুকে টিকা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে,” বলেন ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল।

২০২৩ সালে মহামারির আগে ২০১৯ সালের তুলনায় ২৭ লাখ বেশি শিশু টিকাহীন বা আংশিক টিকা প্রাপ্ত ছিল। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার টিকাদান বিভাগের প্রধান কেট ও’ব্রায়ান জানান, “মহামারির সময় যে বড় ধরনের পিছিয়ে পড়া হয়েছিল, সেখান থেকে এখনও পুরোপুরি ঘুরে দাঁড়ানো যায়নি।”

শূন্য-ডোজ শিশুর সংখ্যা উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে। ২০২৩ সালে এ সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৪৫ লাখে। অথচ ২০১৯ সালে এই সংখ্যা ছিল ১ কোটি ২৮ লাখ। বিশেষ করে সংঘাতপ্রবণ ৩১টি দেশে যেখানে স্বাস্থ্যসেবা সীমিত, সেখানে এই ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি।

তবে বৈশ্বিক এই সংকটের মধ্যেও বাংলাদেশের টিকাদান কর্মসূচি দৃঢ় রয়েছে। দেশের টিকাদানের হার আগের মতোই স্থিতিশীল রয়েছে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাফল্য প্রশংসনীয়।

বিশ্বজুড়ে প্রায় ৬৫ লাখ শিশু ডিটিপি টিকার তৃতীয় ডোজ সম্পূর্ণ করতে পারেনি। হাম টিকাদানের পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক। ২০২৩ সালে প্রথম ডোজ পেয়েছে মাত্র ৮৩ শতাংশ শিশু। অথচ ২০১৯ সালে এই হার ছিল ৮৬ শতাংশ। প্রাদুর্ভাব এড়াতে প্রয়োজনীয় হার ৯৫ শতাংশ। তবে দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছে মাত্র ৭৪ শতাংশ শিশু।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রোস অ্যাডানম গেব্রিয়েসাস বলেন, “হাম টিকাদানের ঘাটতি স্পষ্ট করছে আমাদের টিকাদান ব্যবস্থার ফাঁকফোকর। এটি প্রথমে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ শিশুদেরই আঘাত করে।”

২০২৩ সালে বিশ্বজুড়ে ৩ লাখের বেশি নিশ্চিত হাম আক্রান্তের ঘটনা ঘটেছে, যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় তিনগুণ। তবে বাংলাদেশের মতো শক্তিশালী টিকাদান কাঠামো রয়েছে এমন দেশগুলোতে প্রাদুর্ভাব দেখা যায়নি।

এদিকে, সার্ভিকাল ক্যানসারের জন্য দায়ী এইচপিভি ভাইরাসের বিরুদ্ধে টিকাদানের হার উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। তবে উচ্চ ও নিম্ন আয়ের দেশগুলো এখনও ৯০ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রার অনেক নিচে।

জাতিসংঘ বলছে, বৈশ্বিক টিকাদান কাঠামো উন্নত করতে এখনই উদ্যোগ নিতে হবে। বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর সাফল্য দেখাচ্ছে, টিকাদানে স্থায়ী প্রতিশ্রুতি কীভাবে শিশুস্বাস্থ্যের জন্য ইতিবাচক ফল দিতে পারে।

Reference 

UN alarmed as childhood immunisation levels stall [Internet]. Bangladesh Sangbad Sangstha-BSS (The national news agency of Bangladesh). [cited 2024 Jul 29]. Available from: https://www.bssnews.net/news-flash/200245  

Share:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.