ইউনিভার্সাল হেলথ কভারেজ (ইউএইচসি) অর্জনের প্রতিশ্রুতিকে বাস্তবায়ন করতে বাংলাদেশ সরকার তার সকল নাগরিকের জন্য উচ্চমানের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য সকল প্রচেষ্টাকে উন্নত ও ত্বরান্বিত করার অঙ্গীকার করেছে। এই লক্ষ্যে ২০৩০ সালের মধ্যে UHC অর্জনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসাবে টিকাদানের সাম্যতা প্রতিষ্ঠা করে শূন্য-ডোজ এবং স্বল্প-টিকাপ্রাপ্ত শিশুদের সংখ্যা হ্রাস করার জন্য বাংলাদেশ সরকার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
‘স্মার্ট বাংলাদেশের লক্ষ্যে সার্বজনীন স্বাস্থ্য কভারেজ ত্বরান্বিত করা’ অনুষ্ঠানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতের জন্য তার সরকারের কার্যক্রমের উপর দৃষ্টিপাত করেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উক্ত অনুষ্ঠানে বলেন, “যেহেতু স্বাস্থ্যই সমস্ত সুখের মূল, সেহেতু যেসব এলাকায় স্বল্পোন্নত বা স্বাস্থ্যের দিকে খুব বেশি অগ্রগতি হয়নি সেখানে স্বাস্থ্যসেবা ও পুষ্টিকে সমর্থন করার জন্য পর্যাপ্ত তহবিল গঠন করা উচিত।” [২]। ইউনিসেফ, ডব্লিউএইচও এবং বিশ্বব্যাংকের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থার সহায়তায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। নিউজিল্যান্ডের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এবং ইউনিভার্সাল হেলথের জন্য চ্যাথাম হাউস কমিশনের কো-চেয়ার, রাইট অনারেবল হেলেন ক্লার্ক উক্ত অনুষ্ঠানে ‘গেস্ট অফ অনার’ হিসাবে উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ স্বীকার করে যে সমগ্র জনসংখ্যাকে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা সরকারের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এই দায়িত্বের সাথে সামঞ্জস্য রেখে, সরকার তার রূপকল্প-২০৩০ লক্ষ্য অর্জনের জন্য UHC এর অগ্রগতিকে ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে অতিরিক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে। এই পদক্ষেপগুলির মধ্যে রয়েছে স্বাস্থ্যখাতে জনবলের শূন্য-পদ পূরণ করা এবং শহরাঞ্চলে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার ব্যবস্থা করা।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী, জনাব জাহিদ মালেক, কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে মেডিকেল কলেজ পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা নেটওয়ার্কের কথা তুলে ধরেন। এই নেটওয়ার্কের উল্লেখযোগ্য কৃতিত্বের মধ্যে রয়েছে শিশু টিকাদানের সার্বজনীন কভারেজ, কোভিড-১৯ মহামারীর কার্যকর ব্যবস্থাপনা এবং সফল টিকাদান কর্মসূচী। সরকার এবং অংশগ্রহণকারীরা নিশ্চিত করেছেন যে স্বাস্থ্য পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনায় একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি এবং প্রযুক্তিগত জ্ঞান প্রয়োজন।
অনুষ্ঠানের ইন্টারেক্টিভ সেশন এবং সমান্তরাল প্রযুক্তিগত আলোচনায় সাশ্রয়ী মূল্যে মানসম্পন্ন প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা এবং স্বাস্থ্যসেবা অর্থায়নে প্রাপ্যতা উন্নত করার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছিল। আলোচনায় সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা বাস্তবায়নকে বাধাগ্রস্ত করে এমন চ্যালেঞ্জগুলির সমাধান নির্ণয়ের উপায়গুলো উঠে আসে। বিশেষত বক্তারা টিকাদানের সমতা নিশ্চিত করতে এবং শূন্য-ডোজ ও স্বল্প-টিকাপ্রাপ্ত শিশুদের সংখ্যা হ্রাস করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রচেষ্টার প্রশংসা করেছিলেন।