প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারা বিশ্বের সকল শিশুর জন্য টিকাদান নিশ্চিত করতে সম্মিলিত প্রচেষ্টার আহ্বান জানিয়েছেন। একটি ভিডিও ভাষণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ‘জেনারেশন ইমিউনিটি’ বাড়ানোর লক্ষ্যে বিশ্ব নেতাদের বাংলাদেশকে সমর্থন ও অনুসরণ করতে বলেন।. জুন মাসে স্পেনের মাদ্রিদে গ্যাভি’র গ্লোবাল ভ্যাকসিন ইমপ্যাক্ট কনফারেন্সে তিনি তার ভিডিও বিবৃতিতে বলেন, “বিশ্বজুড়ে সমস্ত শিশু যাতে প্রাণঘাতী সংক্রামক রোগ থেকে নিরাপদ থাকে তা নিশ্চিত করতে আমাদের অবশ্যই একসাথে কাজ করতে হবে।”
গ্যাভি, ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স, এই সহস্রাব্দের শুরু থেকেই তাদের কর্মসূচির মাধ্যমে জীবন রক্ষাকারী টিকাদানের মাধ্যমে এক বিলিয়ন শিশুকে টিকা দেওয়ার মাইলফলক উদযাপন করতে এবং এই ধারাবাহিকতায় একটি জেনারেশন ইমিউনিটি বা নিরোগ প্রজন্ম বাস্তবায়নে এই সম্মেলনের আয়োজন করেছিল। গ্যাভি এই মাইলফলক উদযাপনকে সকল শিশুর জন্য টিকাদান নিশ্চিত করতে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা এবং নতুন উদ্ভাবনের প্রতি গুরুত্বারোপের জন্যও ব্যবহার করেছে। এর লক্ষ্য হল ২০২১ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে আরও ৩০০ মিলিয়ন শিশুকে টিকা দেওয়া, যার মধ্যে গত দুই বছরেই প্রায় ১৩০ মিলিয়ন শিশুর কাছে টিকা পৌঁছেছে। [3]।
শিশুদের জীবন রক্ষাকারী রুটিন ভ্যাকসিন প্রাপ্তি নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। কোভিড-১৯ মহামারী পরবর্তী সময়ে নিয়মিত টিকাদানে ৮৪% উচ্চ কভারেজ বজায় রাখায় এবং টিকাদান কর্মসূচীতে ধারাবাহিকতা প্রদর্শন করায় গ্যাভি বাংলাদেশকে বৈশ্বিক টিকাদানে অনুসরণীয় নেতৃত্ব হিসাবে প্রশংসা করেছেন [4]। প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন যে বাংলাদেশ সরকার তাদের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপট নির্বিশেষে সকল শিশুর টিকাদানের চাহিদা পূরণকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে।
“আমাদের সরকার সমতা এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের উপর লক্ষ্য রেখে জাতীয় টিকা নীতি আপডেট করেছে”। সরকারের সাম্প্রতিক হালনাগাদ নীতিতে সব শিশুর সুস্থ জীবনের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি ও সদিচ্ছাই প্রতিফলিত হয়েছে। এই প্রতিশ্রুতির স্বীকৃতি স্বরূপ বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২০১৯ সালে গ্যাভি, ভ্যাক্সিন অ্যালায়েন্স-এর কাছ থেকে “ভ্যাকসিনেশন হিরো” অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন। সেইসাথে বাংলাদেশের সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচী (ইপিআই) প্রোগ্রাম সম্প্রসারণ এবং এর স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে ২০০১ সাল থেকে গ্যাভি’র দীর্ঘস্থায়ী সহায়ক ভূমিকাকেও সরকার স্বীকৃতি দেয়।
বাংলাদেশে টিকাদানের সাম্যতার বিষয়ে সম্প্রতি শুরু করা “কান্ট্রি লার্নিং হাব” প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং গ্যাভি’র মধ্যে টিকাদানে অংশীদারিত্ব আরও জোরদার হয়েছে। এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হচ্ছে বাংলাদেশে শূন্য-ডোজ এবং কম টিকাদানকারী শিশুদের সংখ্যা হ্রাস করা। কান্ট্রি লার্নিং হাব প্রকল্পটি নিরোগ প্রজন্ম নিশ্চিতের জন্য এবং বাংলাদেশের সমস্ত শিশুকে ‘টিকাদানের মহান উপহার’ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য একটি সঠিক ও সময়োচিত পদক্ষেপ।
তথ্যসূত্র: