জাতিসংঘের নেতৃত্বাধীন ইমিউনাইজেশন এজেন্ডা ২০৩০ এর মূল প্রতিপাদ্য হল এমন একটি বিশ্ব তৈরি করার একটি কৌশল যেখানে সকল বয়সী প্রত্যেকে সুস্বাস্থ্য এবং সুস্থতার জন্য ভ্যাকসিন থেকে সম্পূর্ণরূপে উপকৃত হবে [1]। নির্দিষ্ট লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে টিকাদান কর্মসূচি উদ্ভাবনের জন্য স্বাস্থ্য খাতের নেতৃবৃন্দ এবং নীতিনির্ধারকদের অবহিতকরণ, এবং সচেতন ও উদ্বুদ্ধ করার জন্য কৌশলটি তৈরি করা হয়েছে। এই উদ্যোগের লক্ষ্য বিশ্বব্যাপী টিকাদান প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করার অভিপ্রায়ে সন্নিহিত দৃষ্টিভঙ্গি, অগ্রাধিকার এবং লক্ষ্যগুলির আলোকে সমস্ত অংশীদারদের অন্তর্ভুক্ত করা [৪]।
সংক্ষেপে, ইমিউনাইজেশন এজেন্ডা ২০৩০ কে ‘আইএ-২০৩০’ বলা হয় এবং এর চারটি নীতি রয়েছে [2]। সর্বাগ্রে, কৌশলটি সরাসরি সাধারণ জনগণদের লক্ষ্য করে, তাদের কথা মাথায় রেখে করা। এর বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াটি মানসম্পন্ন উপাত্তের উপর ভিত্তি করে তৈরী করা হবে এবং এটি একটি বিস্তৃত অংশীদারিত্বের কাঠামো অনুসরণ করবে। ‘আইএ-২০৩০’ একটি সহজে ব্যবহারযোগ্য কৌশল, যা পৃথক রাষ্ট্র দ্বারা পরিচালিত হবে এবং প্রতিটি রাষ্ট্র তাদের সেরা অনুশীলনের জন্য তাদের নিজস্ব পদ্ধতি প্রণয়ন করবে। ‘আইএ-২০৩০’ সমস্ত স্তরের অংশীদারদের সাথে সমন্বয় করে তৈরি করা হয়েছে, তাই একে একটি যুক্তিসঙ্গত কৌশল হিসাবে উল্লেখ করা যেতে পারে।
‘আইএ-২০৩০’ অর্থ সংস্থান করা, সম্পদের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা, অংশীদারদের মধ্যে সমন্বয় বৃদ্ধি এবং টেকসই অনুশীলনের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে বাংলাদেশ টিকাদানের সমতা নিশ্চিত করতে চায় [3]। তাই বাংলাদেশের জন্য ‘আইএ-২০৩০’ ব্যবহার করার পাশাপাশি অতীতের টিকাদান সাফল্য পর্যালোচনা, বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন, টিকাপ্রাপ্তির বৈষম্য নিরসন করা, যাতে করে তারা অভিবাসন এবং জনসংখ্যা আন্দোলন, জলবায়ু পরিবর্তন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, দ্বন্দ্ব ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা এবং সরবরাহ ব্যবস্থার সর্বোচ্চ উন্নতি ও রক্ষণাবেক্ষণের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে পারে।
এই এজেন্ডা থেকে বাংলাদেশ বিভিন্নভাবে উপকৃত হতে পারে। এজেন্ডায় অর্থায়ন, প্রকল্প বাস্তবায়নে সহায়তা এবং পূর্ণ সহায়তা প্রদানের বিষয়ে যথাযথ নির্দেশনা রয়েছে। যদিও সুবিধা প্রাপ্তির মাত্রা প্রধানত বাংলাদেশ সরকার এবং সংশ্লিষ্ট অংশীদারদের অভ্যন্তরীণ নীতির উপর নির্ভর করবে, তা সত্ত্বেও বাংলাদেশে টিকাদান প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার বিস্তারিত পরিকল্পনা প্রয়োজন। স্বেচ্ছাসেবক, টিকাদানকারী এবং মন্ত্রণালয়-পর্যায়ের কর্মীদের মতো অত্যাবশ্যক স্বাস্থ্য খাতের অংশীদারদের অবশ্যই লক্ষ্যটিকে তাদের মূল উদ্দেশ্য হিসাবে গ্রহণ করতে হবে [৪]। তাহলেই সবাই ‘আইএ-২০৩০’ থেকে উপকৃত হবে, কারণ দিনশেষে সবার জন্য একটি স্বাস্থ্যকর, নিরাপদ এবং আরও সমৃদ্ধ বিশ্ব তৈরি করতে টিকাদান কার্যক্রম একটি অপরিহার্য বিনিয়োগ।
তথ্যসূত্র