গত ৩১ জুলাই থেকে ২ আগস্ট পর্যন্ত ‘আইসিডিডিআরবি’তে অনুষ্ঠিত হয় তিন দিন-ব্যাপী ‘হিউম্যান সেন্টারড ডিজাইন’ (এইচসিডি) বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালা। এটি বাংলাদেশের শিশুদের টিকাদান কার্যক্রমকে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি পদক্ষেপ। ভৌগোলিক দুরত্বের বিষয়টিকে মাথায় রেখে পুরো প্রশিক্ষণের কার্যক্রম অনলাইন এবং অফলাইনে পরিচালনা করা হয়। একদিকে দুরত্বের বাঁধা অতিক্রম ও অন্যদিকে একটি দারুণ উদ্ভাবনী শিক্ষার পরিবেশ সৃষ্টি হওয়ায়, এই উদ্যোগটি সকলের মাঝে বেশ প্রশংসিত হয়। জাপায়েগো যুক্তরাষ্ট্র থেকে ড. ক্রিস্টোফার মরগান এবং মিসেস মানিয়া ডটসন অনলাইনে, সরাসরি জাপায়েগো ভারত থেকে ড. প্রেম সিং, এবং বাংলাদেশ থেকে ড. সামিহা ইউনুস সহ আরো অনেকে একত্রে এই প্রশিক্ষণটি পরিচালনা করেন। 

নৃবিজ্ঞান ও সামাজিক বিজ্ঞানে অভিজ্ঞ তথ্য সংগ্রহকারীদের কাজের ক্ষেত্রে ‘এইচসিডি’ পদ্ধতি অন্তর্ভুক্ত করানোই ছিল এই প্রশিক্ষণের মূল লক্ষ্য। এই পদ্ধতি বা কাঠামোটি এমনভাবে তৈরি করা হয় যেন একজন তথ্য সংগ্রহকারী সহানুভূতিশীল হতে পারেন এবং একজন সেবাপ্রদানকারীর দৃষ্টিভঙ্গী নিজের মধ্যে তৈরি করতে পারেন। অনুপ্রেরণা প্রদানের পাশাপাশি আরেকটি লক্ষ্য ছিল চলমান গাভি কান্ট্রি লার্নিং হাব প্রকল্পের কার্যক্রমসমূহকে আরো সমৃদ্ধ করা, যার ফলে সম্মিলিতভাবে বাংলাদেশের টিকাদান কর্মসূচিকে উন্নত করা যায়।

প্রশিক্ষণের শুরুতেই, নতুন দৃষ্টিভঙ্গি এবং উপলব্ধি নিয়ে দক্ষ তথ্য সংগ্রকারীদের দল ব্যক্তিগতভাবে আলোচনা শুরু করে। এই আলোচনাগুলো অনুষ্ঠিত হয় টিকা না পাওয়া শিশুদের বাবা-মা ও সরাসরি সেবা প্রদানকারী ব্যক্তি অর্থাৎ চিকিৎসা সহকারীদের সাথে। এই সম্পূর্ণ কার্যক্রমটি অনুষ্ঠিত হয় গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা উপজেলায়। 

আলোচনা ও তথ্য সংগ্রহ শেষ হওয়ার সাথে সাথেই সংগৃহীত তথ্যসমূহ বিশদভাবে বিশ্লেষণ করা হয়। এই পর্যালোচনা থেকে প্রাপ্ত তথ্য ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে অনুষ্ঠিতব্য কো-ক্রিয়েশন কর্মশালার প্রস্তুতিতে গুরুত্বপূ্র্ণ ভূমিকা রাখবে। এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচিটি কাজের গতি-প্রকৃতি নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে, কারণ এখানে কমিউনিটি বা এলাকাভিত্তিক সব ধরণের সেবাপ্রদানকারী ও তথ্য সংগ্রহকারীদেরকে একত্রিত করা হয়। কর্মশালার উদ্দেশ্যই ছিলো সকলের সামগ্রিক অবদানের সমন্বয়ে ভবিষ্যৎ গবেষণা পরিকল্পনা চুড়ান্ত করা।  

এই উদ্যোগটি সহযোগিতা, উদ্ভাবনী ক্ষমতা এবং সকলের সাবলীল অংশগ্রহণের শক্তির একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করে। বর্তমান বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে এই প্রশিক্ষণও ভৌগোলিক সীমাবদ্ধতাকে অতিক্রম করে সকলের মধ্যে যোগাযোগ ও জ্ঞানের প্রসারের প্রতি গুরুত্ব দিয়েছে। ‘এইচসিডি’ এর নীতিগুলিকে কাজে লাগিয়ে, প্রশিক্ষণ এবং এর কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে উল্লেখযোগ্য কিছু পদক্ষেপ নির্ধারিত হয়েছে। এই পদক্ষেপগুলো একদিকে যেমন কার্যকর অন্যদিকে আবার এর থেকে সুবিধাভোগী জনগোষ্ঠীর প্রয়োজন ও দৃষ্টিভঙ্গীর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

শেয়ার করুন:

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.