দ্য ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ডায়রিয়াল ডিজিজ রিসার্চ, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর,বি) এবং গ্যাভি, ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্সের সহযোগিতায়; বাংলাদেশে ইমিউনাইজেশন ইক্যুইটির জন্য কান্ট্রি লার্নিং হাব (সিএলএইচ) চালু করেছে। এই উদ্যোগের উদ্দেশ্য হ’ল শিশুদের ভ্যাকসিনগুলি সরবরাহ করতে বাধা দেয় এমন প্রতিবন্ধকতাগুলির তথ্য সংগ্রহ করা ও বিশ্লেষণ করা, জিরো ডোজ (জেডডি) শিশুদের সনাক্ত করা, প্রমাণ-ভিত্তিক কার্যকর পন্থা জোরদার করা এবং নিয়মিত মূল্যায়নের জন্য মেট্রিক্স, ব্যবস্থা এবং পদ্ধতিগুলি উন্নত করা।

কান্ট্রি লার্নিং হাব ফর ইমিউনাইজেশন ইক্যুইটির সূচনা সভা গত ১০ জানুয়ারী ২০২৩ তারিখে সিরডাপ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব ডাঃ মুঃ আনোয়ার হোসেন হাওলাদার। কান্ট্রি লার্নিং হাব (সিএলএইচ) শিশুদের কাছে টিকাগুলো পৌঁছানোর বাধাগুলির বিষয়ে প্রাপ্ত জ্ঞানসমূহ বিশ্লেষণ ও সেই আলোকে তত্ত্ব অনুসন্ধান করতে প্রকল্প পরিকল্পনাকারী এবং নীতিনির্ধারকদের সাহায্য করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সিএলএইচ, জিরো-ডোজ শিশু এবং মিস্ড কমিউনিটি অর্থাৎ যারা কোন কারণে সবগুলো টিকা পায়নি তাদেরকে সনাক্ত করতে এবং তাদের কাছে পৌঁছাতে কোন পদ্ধতিটি  কার্যকর, কোন কার্যক্রমটি আরো সম্প্রসারণ করতে হবে এবং কোন কার্যক্রমটি কার্যকর নয় তা চিহ্নিত করতে সাহায্য করবে। আইসিডিডিআর,বি-এর নির্বাহী পরিচালক ডা. তাহমিদ আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ যদিও টিকাদানের ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য হার অর্জন করেছে, তবে কিছু শিশু এখনও টিকাহীন রয়ে গেছে। সিএলএইচ খুঁজে দেখবে কেন এটি ঘটছে এবং কীভাবে বাংলাদেশে ও বিশ্বের অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশে সকলের জন্য টিকার সমান প্রাপ্তি নিশ্চিত করা যায়। 

উদ্যোগটি জিরো-ডোজ শিশু এবং মিস্ড কমিউনিটিগুলোকে চিহ্নিত করতে এবং তাদের কাছে পৌঁছানোর জন্য পরিক্ষিত পদ্ধতিগুলো ব্যবহার করবে এবং নিয়মিত উপাত্ত মূল্যায়ন ও ব্যবহার করার জন্য ম্যাট্রিক্স, পরিমাপ এবং পদ্ধতিগুলো উন্নত করতে সহায়তা করবে। এই প্রচেষ্টার মাধ্যমে, সিএলএইচ-এর লক্ষ্য তাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থা বা ভৌগোলিক অবস্থান নির্বিশেষে, সকলের জন্য টিকার সমান প্রাপ্তি অর্জন করা। 

বাংলাদেশে ইমিউনাইজেশন ইক্যুইটির জন্য কান্ট্রি লার্নিং হাব একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ যা বাংলাদেশে জিরো-ডোজ শিশুদের সংখ্যা কমাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। এটি সমন্বিত টিকাদান কর্মসূচি’র বিদ্যমান ত্রুটিগুলো চিহ্নিত করে তা সমাধানের জন্য ইতিমধ্যে প্রমাণিত সমাধানের উপায়গুলো সন্নিবেশ করবে এবং টিকাদান কর্মসূচিকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করবে। এই উদ্যোগটি ইপিআই-এর সর্বোত্তম কার্যক্রম এবং কার্যকর পদ্ধতিগুলো বিশ্বের অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশগুলোর সাথে আদান-প্রদানের মাধ্যমে জিরো-ডোজ শিশু এবং মিস্ড কমিউনিটির কাছে টিকার সুবিধা পৌঁছাতেও সাহায্য করবে৷ 

উক্ত সভায় ডা. মো. জসিম উদ্দিন,আইসিডিডিআর,বি-এর ইমেরিটাস বিজ্ঞানী এবং ‘কান্ট্রি লার্নিং হাব ফর ইমিউনাইজেশন ইক্যুইটি ইন বাংলাদেশ’ প্রকল্পের প্রধান তদন্ত কর্মকর্তা; ডা. হেইডি রেনল্ডস, সিনিয়র বিশেষজ্ঞ, মূল্যায়ন এবং শিক্ষা, গ্যাভি; জনাব সৈয়দ মজিবুল হক, অতিরিক্ত সচিব, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়; ডক্টর মুহাম্মদ শরিফুল ইসলাম, লাইন ডিরেক্টর (ভারপ্রাপ্ত), এমএনসি এন্ড এএইচ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়; এবং আইসিডিডিআর,বি-এর পক্ষ থেকে ডা. এস.এম. মনজুর আহমেদ হানিফি, ভারপ্রাপ্ত সিনিয়র ডিরেক্টর, এবং  হেলথ সিস্টেম পপুলেশন স্টাডিজ ডিভিশনের (এইচএসপিএসডি) বিজ্ঞানী ডা. মাহবুব-ই-এলাহী খান চৌধুরী সহ আরও অনেকে বক্তব্য রাখেন। উক্ত সভায় সরকারী ও বেসরকারী সংস্থার অনেক উচ্চপদস্থ প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। 

শেয়ার করুন:

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.