বৈশ্বিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এবং অংশীদারগণ বিশ্বব্যাপী টিকাদানের সাম্যতা নিশ্চিত করার জন্য ক্রমাগত কাজ করছে। কিন্তু এমন কিছু সময় আছে যখন ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও বেশ কিছু জিনিস নিশ্চিত বা নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। ২০২০ সালের কোভিড মহামারী পরিস্থিতিও এরকমই ছিল। পুরো বিশ্ব যেন একেবারে থমকে গেল। রাস্তায় কোন মানুষকে দেখা যায়নি এবং মানুষ তখন চাচ্ছিল শুধুই বেঁচে থাকতে। এমনকি যদি খালি রাস্তায় মানুষ দেখাও যেত, তবে তারা ছিলেন পুলিশ বা স্বাস্থ্যকর্মী। সবকিছুই যেন থমকে গিয়েছিল, এবং একইসাথে টিকাদান কর্মসূচিও স্থবির হয়ে গিয়েছিল।
সেই সময়ে বেশিরভাগ দেশ করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে তাদের সীমান্তে লকডাউন বা কারফিউ জারি করেছিল। লকডাউন, কারফিউ এবং সামাজিক দূরত্বের কারণে অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের নির্ধারিত টিকা কেন্দ্রে নিয়ে যেতে পারেননি [১]। সরকার এবং বৈশ্বিক জোটগুলি বেশিরভাগই কোভিড-১৯ এর সমস্যা মোকাবেলায় মনোনিবেশ করেছিল। টিকা প্রদানকারীগণও করোনাভাইরাসের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ ছিল এবং এইকারণে অনুন্নত দেশগুলিতে টিকাদান কার্যক্রম প্রায় বন্ধই হয়ে গিয়েছিল [2]। ন্যাশনাল ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম (এমআইএস) থেকে পরিষেবা ব্যবহারের তথ্য অনুসারে, সামগ্রিক ইপিআই প্রোগ্রামে কোভিড-১৯ এর প্রভাব বিধ্বংসী ছিল। কারণ করোনা প্রাদুর্ভাবের পরে ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে টিকা দেওয়ার সেশনের সংখ্যা ১৮% এবং মে ২০২০-তে ২২% হ্রাস পেয়েছে [3] .
কোভিড-১৯ এর ভয়ে বাবা-মা এবং তাদের সন্তানেরা ভ্যাকসিনেশন পয়েন্টে যেতে ভয় পান [৪]। সারাদেশে ভয় ও আতংক ছড়িয়ে পড়ে, যার ফলে মানুষ তখনি চিকিৎসার খোঁজ নিত যখন এটি এড়ানোর অন্য কোনো উপায় থাকত না। এমনকি বেশিরভাগ স্বাস্থ্যকর্মীরা হাসপাতালে ফিরে যেতে এবং মানুষকে সেবা দিতে রাজি ছিলেন না। এই অবস্থার উন্নতির জন্য, বাংলাদেশ সরকার (জিওবি) ব্যাপকভাবে সাধারণ জনগণের জন্য কোভিড-১৯ টিকার সহজলভ্যতা নিশ্চিত করেছে। বাংলাদেশে, জনসংখ্যার ৯৩% কমপক্ষে প্রথম ডোজ টিকা পেয়েছে এবং জনসংখ্যার ৮৪% করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ টিকা পেয়েছে [5]।
উপরন্তু, WHO এবং UNICEF-এর সাথে পরামর্শ করে, বাংলাদেশ সরকার নিয়মিত টিকাদান কার্যক্রমকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরত আনতে কোভিড-১৯ এর সময় টিকাদান অব্যাহত রাখার জন্য জাতীয় প্রায়োগিক নির্দেশিকা জারি করেছে। নির্দেশিকাগুলির মধ্যে রয়েছে যেসকল শিশু তাদের টিকা মিস করেছে বা সম্পূর্ণ করেনি তাদের তালিকাভুক্ত করা এবং টিকাদান পর্যবেক্ষণ প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করার জন্য সুপারিশমালা প্রণয়ন। এইভাবে, WHO-এর সহায়তায়, বাংলাদেশ সরকার কোভিড-১৯ এর কারণে হারানো টিকাদানের বিস্তৃতি পুনরুদ্ধার করতে নিয়মিত টিকাদান কার্যক্রমের সম্পূর্ণ পুনঃসূচনা নিশ্চিত করেছে [6]।
তথ্যসূত্র