শিশুদের সুস্থ রাখতে এবং মারাত্মক রোগ থেকে রক্ষা করার জন্য সময়মত টিকাদান করা অপরিহার্য । সাম্প্রতিক বছরগুলিতে বাংলাদেশ তার টিকাদান কর্মসূচি সম্প্রসারণে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে, যেখানে এক বছরের কম বয়সী প্রায় ৯৭.৪% শিশুদের টিকা দেওয়া হয়েছে [2]। কিন্তু এখনও প্রত্যন্ত অঞ্চলে টিকা সম্পর্কে জ্ঞানের অভাব রয়েছে, যার ফলে জনসংখ্যার একটি ক্ষুদ্রাংশ প্রোগ্রামের আওতায় আসেনি [1]। এই নিবন্ধটির লক্ষ্য টিকাদানের সময়সূচী অনুসরণ করার গুরুত্ব তুলে ধরা এবং প্রচলিত টিকাগুলো সম্পর্কে মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করা।
সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই)-এর আওতায় বর্তমানে ডিপথেরিয়া, হুপিং কাশি, যক্ষ্মা, পোলিও, হাম, রুবেলা, হিমোফিলাস, ইনফ্লুয়েঞ্জা-বি, হেপাটাইটিস বি এবং নিউমোনিয়া সহ ১০টি মারাত্মক রোগের টিকা প্রদান করা হয়। এই টিকাগুলি স্কুলে, রুটিন ইমিউনাইজেশন সেন্টারে এবং স্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রগুলিতে দেওয়া হয়। শিশুরা যাতে এই রোগে আক্রান্ত না হয় তার জন্য সঠিক সময়ে টিকা গ্রহণ করা অপরিহার্য।
শিশুদের টিকা দেওয়ার সময়সূচী অনুসরণ করা টিকার যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বিসিজি ভ্যাকসিন জন্মের পরপরই দেওয়া উচিত, এবং পেন্টাভ্যালেন্ট, পিসিভি এবং ওপিভি ভ্যাকসিনের তিনটি ডোজ ৬, ১০ এবং ১৪ সপ্তাহ বয়সে দেওয়া উচিত [3]। হাম এবং রুবেলা ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ নয় মাসে দেওয়া উচিত, তারপরে দ্বিতীয় ডোজ ১৫ মাসে দেওয়া উচিত [4]। সব মিলিয়ে শিশুদের জন্ম থেকে ১৫ মাস বয়স পর্যন্ত অন্তত পাঁচবার টিকা কেন্দ্রে যেতে হবে।
এই টিকাগুলি ছাড়াও, বাংলাদেশে ইপিআই প্রোগ্রাম শিশুদের টিটেনাস টিকার ৩টি ডোজ গ্রহণ করার সুপারিশ করেছে। টিটেনাস ভ্যাকসিন হল ইপিআই সময়সূচীর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা শিশুদেরকে জন্মের পরে ৬ষ্ঠ, ১০ম এবং ১৪ তম সপ্তাহে দেওয়া হয়। এই টিকা শিশুদের ধনুষ্টংকারের মত গুরুতর রোগ থেকে রক্ষা করে, যে রোগ হলে শিশুদের মৃগী রোগ এবং গুরুতর পেশী খিঁচুনি হতে পারে [5]।
শিশুদের এইসব রোগের বিরুদ্ধে সর্বাধিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে টিকাদানের সময়সূচী অনুসরণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাদের সঠিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নিশ্চিত করার জন্য নির্দিষ্ট বয়সে ভ্যাকসিন দিতে হবে। সরকারী এবং বেসরকারী সংস্থাগুলিকে অবশ্যই সর্বসাধারণের মধ্যে বিশেষ করে প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে, প্রচলিত টিকাসমূহ এবং সেগুলোর গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করতে হবে, ।